(रचनाकाल: 2016)
''' लीजिए, अब यह कविता बांग्ला भाषा में पढ़िए
গামছা
পিতা যখনই শহরে বেরোতেন
মা আলনা থেকে গামছা নিয়ে
পিতার স্কন্ধের উপর ন্যস্ত করতেন
যেন শুভকামনাগুলি গামছায় মুড়ে দিচ্ছেন
- সব কাজ শেষে সুভালাভালি ফিরে এসো
গোধূলির অন্ধকার গাঢ় হওয়ার আগে।
যৌবনের প্রারম্ভে
মা যেদিন এই গৃহে এসেছিলেন বিবাহের পর
হয়তো সেদিনই নিজের সমস্ত স্বপ্ন
গামছায় মুড়ে পিতার হাতে তুলে দিয়েছিলেন
পিতা
সাংসারিক কাজে বড়ো ভুলোমনা ছিলেন
প্রায়শই অনর্থ সৃষ্টি করতেন
কখনো ভুলে যেতেন নিজের চশমা,
কখনো কলম, দোকানের চাবি হারাতেন
কিংবা দরকারি আরো কিছু
এমনি করেই হয়তো মায়ের স্বপ্নের পুঁটুলি
হারিয়ে ফেলেছিলেন কোনোদিন
শহরে যাবার রাস্তায়
মা'কে
আমি টিভি বা ফিল্মের স্ত্রীদের মতো আচরণ করতে
কখনো জোর করে কিছু চাইতে
কিংবা জেদ করতে দেখিনি
মা তো ছিলেন কেবল মা
হয়তো পিতার কাছেও...
তাই কখনো জিজ্ঞাসা করতে পারেন নি
পিতা তার স্বপ্নের পুঁটুলিটা কোথায় হারিয়ে এসেছেন
পরবাসের ট্রেন ধরার জন্য
বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে
মা যেদিন আমার কাঁধের উপরেও
গামছা ন্যস্ত করলেন
আমি সেদিন কাঁধের উপর সহসা
প্রবল ভারবোধ করেছিলাম
প্ল্যাটফর্মের উদার একাকীত্বে
ট্রেনের অপেক্ষায় বসে বসে
কাঁধের গামছার দিকে চোখ ফেরালাম
তার মুখও আমার মতোই শুকনো,ঝুঁকে আছে
মায়ের হাতের ভার গামছায় মোড়া
আমি অনুভব করতে পারলাম
যেমন ছিল তেমনই রয়েছে
বিদায়ের ক্ষণে মমতায় উদ্যত মায়ের হাত
ভেসে উঠলো চোখের সামনে
ভেসে উঠলো পিতার শ্রান্ত কাঁধ
গামছার ওজনেও যা আজকাল ঝুঁকে যায়...
গামছা
এখন আমার এই দীর্ঘ সফরের সঙ্গী হবে
আমি তার উপরে অনুরাগে শ্লথ হাত বোলালাম
ধন্যবাদ দেবার ঢঙে তার দিকে তাকিয়ে
আড়চোখে মুচকি হাসলাম
জন্মভূমি থেকে হাজারো মাইল দূর, এখন
শহরের আতত রৌদ্র মাথায় করে
যখনই বেরোতে হয়
আমার উদাস ও কঠিন দিনের সাথী গামছাকে
আমি তুলে নিই, জড়াই
তাকে ধারণ করি, কেননা জানি
এই গামছার টানাপোড়েনের প্রতিটি সূতো
আমারই রক্তের নুনে নিষিক্ত হয়ে আছে
আসল কথা হল
আমাদের মতো কোন পুরবিয়া মানুষের কাছে
গামছা মানে ছোটো এক থান
সস্তা কাপড়ের টুকরো নয়
গামছা আসলে প্রত্যেকের কাঁধের উপরে
বরফের মতো জমাট
তার নিজের সময়।
(বাংলা রূপান্তর : শতঞ্জিৎ ঘোষ)
</poem>